সোনাগাজীতে ৪ লাখ টাকা পেয়ে ফেরত দিলেন মাদ্রাসা শিক্ষার্থী

সোনাগাজীতে ৪ লাখ টাকা পেয়ে ফেরত দিলেন মাদ্রাসা শিক্ষার্থী
Published from Blogger Prime Android App

রবিবার | ২০ এপ্রিল ২০২৫ ঈসায়ী
নুর উদ্দিন রনি | বিশেষ প্রতিনিধি:

ফেনীর সোনাগাজীতে রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া ৪ লাখ টাকার সমপরিমান ডলার ইউরো গ্রীস প্রবাসীকে প্রেরত দিয়েছেন মাদ্রাসার শিশু শিক্ষার্ক্ষী। গতকাল শুক্রবার রাতে পৌরসভার সাবেক মেয়র জামাল উদ্দিন সেন্টুর উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীর পিতা আব্দুল আজিজ,ভাই সাইফুর রহমান অপু  গ্রীস প্রবাসী লোকমান হোসেনের হাতে তুলে দেয়। 

এদিকে প্রবাসীর ২৫ শত ডলার, শতাধিক ইউরো, বাংলাদেশী টাকা ও গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র ফেরত দিয়ে প্রশংসায় ভাসছে সোনাগাজী ইসলামীয়া কামিল মাস্টার্স মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেনীর শিক্ষার্থী ইসতিয়াক রহমান।

গ্রীস প্রবাসী লোকমান হোসেন বলেন, আমি গত ৪ এপ্রিল একটি কাজে সোনাগাজী সদর ইউনিয়নের ভৈরব চৌধুরী বাজার গিয়েছি। কাজ শেষে ফেরার পর সোনাগাজী বাজারে আসার পর দেখি আমার মানি ব্যাগটি নেই। পরবর্তীতে অনেক খোঁজাখুজি করে না পেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কার্ড থাকায় সোনাগাজী মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরী করি। পরে হারানোর বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক একাউন্ট ও একাধিক নিউজ পেইজে প্রচার করি। তারপর প্রায় ১০-১২দিন চলে যাওয়ার পর মালামাল ফেরত পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু আমাকে অবাক করে শুক্রবার সন্ধ্যায় আমার মোবাইল নাম্বারে কল আসে, রিসিভ করতেই মানি ব্যাগ পাওয়ার তথ্য জানিয়ে সেটি ফেরত দিতে মালিককে খুঁজছে বলে অবহিত করে। মানিব্যাগটি আমার কিনা যাচাই করতে রাতেই তাদের সাথে সাক্ষাৎ করি। পরবর্তীতে দেখি আমার সকল টাকা ও জিনিসপত্র সব ঠিক আছে। 

তিনি আরো বলেন,আমি শিশু শিক্ষার্থীর সততা দেখে অবাক হয়েছি,সে এবং তার পরিবার চাইলে কাউকে না জানিয়ে নিজেরাপই রেখে দিতে পারত। কিন্তু তারা তা করেনি। মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ইশতিয়াক রহমান ও তার পরিবারকে ধন্যবাদ। এটাই প্রকৃত শিক্ষা।

শিক্ষার্থী ইশতিয়াক রহমান বলেন, ঈদের তিন দিন (৫এপ্রিল) পর বাসা থেকে আম্মুর সাথে ঘুরতে বের হই। পৌরসভার খাদ্য গুদামের সামনে (সোনাগাজী-মুহুরী প্রজেক্ট সড়ক) ব্যাগটি পাই। পরবর্তীতে সেটি নিয়ে বাসায় রাখি। কার কাছে কিভাবে দেবো সেটি বুঝতে পারছিনা। পরে ঘরে রেখে আমি আব্বু আম্মু সহ চিকিৎসার কাজে ঢাকায় চলে যাই। সেখান থেকে ১৫ এপ্রিল এলাকায় ফিরে আসি। তখন আমার ভাইয়া (সাইফুর রহমান অপু) কে বলি আমি ঘুরতে গেলে মানি ব্যাগটি পেয়েছি। 

সাইফুর রহমান অপু বলেন, আমার ছোট ভাই মানি ব্যাগের কথা বললে আমি ফেসবুক একাউন্টে পোস্ট দিলেও কেউ কোনো সাড়া দেইনি৷ পরবর্তীতে স্থানীয় অনলাইন পেইজে হারানোর বিজ্ঞপ্তি দেখে কল দিলে মালিকের সন্ধান পাই। পরে সত্যতা যাচাইয়ের পর ফেরত দিই।

সাবেক মেয়র জামাল উদ্দিন সেন্টু বলেন, অনেকে আরো অল্প টাকা হলেও ফেরত দেয়না। সেখানে এতটাকা থাকার পরও ফেরত দেয়া সত্যিই সৎ মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ। এটা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় কাজ। এমনটি সবার ক্ষেত্রে হওয়া উচিত। আমি উপস্থিত থেকে টাকা, জিনিসপত্র সহ মানি ব্যাগ হস্তান্তর  করি।

Comments