অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি: ফেনী আজ বিপন্ন—আমরা কি প্রস্তুত আগামী বন্যার জন্য ?
বন্যা কেটে গেছে বেশ কিছুদিন, কিন্তু ফেনীর মানুষ এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। নদীর পাড়গুলো এখনো অরক্ষিত, ভাঙন এখনো অব্যাহত, বহু পরিবার ঘরবাড়ি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, এখনো বাঁধ নির্মাণের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাইনি।
ফেনীর বর্তমান বাস্তবতা:
ফেনী নদী, মুহুরী নদী ও কহুয়া নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলো প্রতি বছর ভয়াবহ নদীভাঙনের শিকার হচ্ছে। অথচ স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি বারবার দেওয়া হলেও বাস্তবে অগ্রগতি নেই।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হাজারো পরিবার এখনও সরকারের সরাসরি সহায়তার বাইরে রয়ে গেছে।
বিদ্যালয়, মসজিদ, বাজার ও কৃষিজমি পানিতে ভেসে গিয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
বন্যা-পরবর্তী সময়ে আক্রান্ত হয়েছে ডায়রিয়া, চর্মরোগ, এবং বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে শত শত মানুষ, কিন্তু পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা এখনো নিশ্চিত হয়নি।
আমরা জানতে চাই:
সরকার ফেনীর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য যে বরাদ্দ দিয়েছে, সেই অর্থ কীভাবে, কোথায় ব্যয় হয়েছে?
ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের হাতে কীভাবে পৌঁছেছে সেই সহায়তা? তার কোনো স্বচ্ছ হিসাব কি জনগণের সামনে এসেছে?
ভবিষ্যতে যাতে এমন বন্যা বা দুর্যোগে ফেনী আর ক্ষতির শিকার না হয়, সেই পরিকল্পনা কোথায়?
আমরা চাই:
1. দ্রুত নদীভাঙন রোধে টেকসই বাঁধ নির্মাণ শুরু হোক।
2. প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা প্রকাশ করে সুষম ও স্বচ্ছ সাহায্য নিশ্চিত হোক।
3. বন্যার টাকাগুলোর ব্যয়সংক্রান্ত তথ্য জেলা প্রশাসন বা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হোক।
4. ফেনীতে একটি ‘দুর্যোগ প্রস্তুতি সেল’ গঠন করে আগাম প্রস্তুতির জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হোক।
5. জলবায়ু সহনশীল অবকাঠামো গড়ে তুলে ফেনীকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ করা হোক।
এটি কোনো আমাদের অভিযোগ নয়, এটি একটি আহ্বান।
আমরা চাই সরকার, জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের দৃষ্টি যেন ফেনীর মানুষের বাস্তব পরিস্থিতির দিকে ফিরে আসে।
আমরা উন্নয়ন চাই, কিন্তু সেটি হতে হবে অন্তর থেকে—গড়ার প্রত্যয় নিয়ে, টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব নিয়ে।
আবদুল কাইয়ুম
Comments
Post a Comment