ফেনী নদীর রয়্যালিটি কেলেংকারি, দুই কর্মীর সাথে সম্পর্ক ছিন্নের সিদ্ধান্ত জামায়াতের

 ফেনী নদীর রয়্যালিটি কেলেংকারি, দুই কর্মীর সাথে সম্পর্ক ছিন্নের সিদ্ধান্ত জামায়াতের



ফেনী নদীতে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ উঠায় মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের দুই জামায়াত কর্মীর সাথে সাংগঠনিক সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াত। তারা হলেন, ছত্তরুয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন প্রকাশ জাহাঙ্গীর হুজুর ও অপরজন হলেন জয়পুর পূর্ব জোয়ার গ্রামের রবিউল হোসেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ নিজস্ব তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়া অভিযুক্ত আরো কয়েকজনের ব্যাপারে তদন্ত চলছে বলেও সূত্র জানিয়েছে।
গত মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে করেরহাট গণিয়াতুল উলুম হোসাইনিয়া আলিম মাদ্রাসার হল রুমে কর্মী সম্মেলনে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। এসময় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জামায়াতের আমির আলাউদ্দিন শিকদার বলেন, যারা সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে অপকর্ম করেছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা রয়্যালিটি নিয়েছে তারা সেটার দ্বায় ভার বহন করবে। প্রয়োজনে পাঁচ জন কর্মী নিয়ে সংগঠন চলবে কিন্তু অবৈধ উপার্জনের সাথে যুক্ত কাউকে জামায়াতে স্থান দেয়া হবে না। এবিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

বৈঠকে অবৈধ বালু ব্যবসার সাথে জামায়াতের সকল স্তরের নেতাকর্মীদের যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে কঠোর হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে যারা বালু ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সিন্ডিকেটে যোগ দিয়ে আর্থিক সুবিধা নিয়েছে তাদেরকে অর্জিত সম্পূর্ণ অর্থ ফেরত দিয়ে সিন্ডিকেট থেকে বেরিয়ে আসার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সংগঠনের এই সিদ্ধান্তে স্থানীয় নেতাকর্মীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। গুটিকয়েক জামায়াত নামধারী সুবিধাবাদী ব্যক্তির কারণে এলাকায় সংগঠনের ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ায় সম্প্রতি নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছিল। স্থানীয় কর্মীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরিচালিত সাংগঠনিক তদন্তে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বালু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছ থেকে জামায়াতের পরিচয় ব্যবহার করে অন্যায্য সুবিধা আদায়ের অভিযোগ প্রমাণিত হয়।
অভিযুক্ত রবিউল হোসেন বলেন, আমরা বালু ব্যবসায়ের সাথে জড়িত। আমাদের নিজস্ব ব্যবসা এটি। আমরা কোন সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে রয়্যালিটি নিই নাই। এটা আমাদের ব্যবসায়ের অংশ। এর বেশি কিছু বলতে হলে আপনি সরাসরি এসে কথা বলেন। তারপর আপনাকে বিস্তারিত বুঝিয়ে বলতে পারবো।
এবিষয়ে জানতে জাহাঙ্গীর হুজুরকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে ১নং করেরহাট ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাষ্টার ফখরুল আলম ভূঁইয়া জানান, এ বিষয়ে আমি কোন মতামত দিতে পারবোনা। এটা আমাদের থানা আমির দায়িত্ব নিয়েছেন। উনি সিদ্ধান্ত নিবেন ও বিস্তারিত বলবেন ‌।
জোরারগঞ্জ থানা জামায়াতের আমির নুরুল হুদা হামিদী জানান, জামায়াতে ইসলাম কোন রয়্যালিটি গ্রহণ করে নাই। যারা করছে তারা ব্যক্তিগত ভাবে নিয়েছে। আমরা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে তাদের কর্মী থেকে অব্যাহতি দিয়েছি। তারা আমাদের দায়িত্বশীল কেউ নয়। এগুলো আমরা বৈঠকে জনশক্তিদের জানিয়ে দিয়েছি।
 react
9

Comments